Pages

Tuesday 10 May 2016

গা ছমছমে ইটাচুনা রাজবাড়ি






 উইক এন্ড ডেস্টিনেশন তো কত রকমই হয়, সমুদ্র, পাহাড়, জঙ্গল, নদী তা সপ্তাহান্তের ছুটিটা যদি একটু গা ছমছমে পরিবেশে কাটে তা হলে কেমন হয়?
এমনই এক গন্তব্যস্থল রয়েছে হুগলিতে হাওড়া থেকে ঘণ্টা দেড়েকের পথ। কলকাতা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে। পেল্লাই এক জমিদারবাড়ি হলফ করে বলতে পারি গোটা বাড়ি ঘুরে দেখতে পা ব্যাথা হয়ে যাবে তবে সে বাড়ি কিন্তু মোটেই ভাঙাচোরা নয় হ্যাঁ খানিক অংশ বন্ধ বটে, কিন্তু বাকি অংশও কম কৌতূহল উদ্দীপক নয়!

লুটেরা-সহ বহু ছবির শুটিং হয়েছে এই ইটাচুনা রাজবাড়িতে। সিনেমার পরিচালক-প্রযোজকদের কাছে এই বাড়ির খুব ডিমান্ড। বিশাল বাড়িতে থাকবার জন্য রয়েছে বড়মার ঘর, বড়পিসি, মেজপিসি, ছোটপিসিদের ঘর আর সেই সব ঘরে পুরনো আমলের নকশাকাটা পালঙ্কতাতে দুধসাদা চাদরের ওপর আরাম করে বসে নিজেকে খানিকক্ষণ জমিদারবাড়ির সদস্যও ভেবে নিতে পারেন সেই ভাবনাকে আরও যুতসই করে তুলবে রাজকীয় খানা আহা! পিতলের থালা বাটিতে বহুপদ সাজিয়ে যখন খাবার পরিবেশন করা হয়, তখন তা দেখেই মন জুড়িয়ে যায় তার সঙ্গে সঙ্গতে থাকে রবীন্দ্র সঙ্গীত
তা এ হেন জমিদারবাড়ির ইতিহাসখানা একটু বলে রাখি ১৭৬৬ সালে এ বাড়ি তৈরি করেন সাফল্য নারায়ণ কুণ্ডুতাঁর আসল পদবী ছিল কুন্দন
তিনি ও তাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন মারাঠি লুঠেরা দুর্ধর্ষ বর্গী একসময় বর্গীরা বাংলায় আক্রমণ শুরু করে মারামারি-কাটাকাটি থামলে বর্গীদের মধ্যে অনেকে বাংলায় রয়ে যায়। এঁদের একজন ছিলেন সাফল্য নারায়ণ তাঁর প্রচুর সম্পত্তি ছিল তাই দিয়ে তিনি পাণ্ডুয়া লাগোয়া ইটাচুনা, খন্নানে প্রচুর জমিজমা কেনেন পাকাপাকি বসবাস শুরু করেন।
এই পরিবারের বর্তমান বংশধররাই রাজবাড়িটিকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন গ্রাম্য পরিবেশে এই রাজবাড়িতে প্রাচীনত্বের সঙ্গে আধুনিকতার মেববন্ধন লক্ষনীয়। বাড়ির কাঠামো প্রাচীন হলেও, যে ঘরগুলি পর্যটকদের থাকার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে তাতে সমস্ত আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে এসি, গিজার, কমোড, বাথটাব, ঝাঁ চকচকে স্নানাগার সবই রয়েছে ঘর লাগোয়া
আর রয়েছে এর প্রাচীন ঠাকুরদালান, সেখানে রাধাকৃষ্ণের নিত্য পুজোর আয়োজন, সন্ধ্যারতি হয়
ভাবা যায় একসময়ের বর্গীরা পরবর্তীতে বৈষ্ণব হয়ে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন বাড়িতে
বিশাল বাড়ির আনাচে-কানাচে ঘুরে দেখলে মেন হবে যেন গোলকধাঁধাঁ সারি সারি ঘর, বিভিন্ন জায়াগায় সিঁড়ি, নাচঘর, অন্দর মহল, বাহির মহল নিয়ে সে এক জমজমাটি ব্যাপারআর সন্ধে হলেই চারপাশ নিঃস্তব্ধ রাতের বেলা বিশাল বাড়ি ঘুরলে গা ছমছম করতে বাধ্য বলা যায় না, ইচ্ছে হলে তেনারা দেখাও দিতে পারেন


তবে ভয় পাওয়ার কারণ নেই বর্গীদের বাড়ি হলেও, খুব একটা বদনাম এ বাড়ির নেই বরং বিশাল ছাদের এই বাড়িতে একরাত কাটিয়েই আসুন ভাল লাগবেই।আর হ্যাঁ ছাদটা ঘুরে দেখতে ভুলবেন না।

কী ভাবে যাবেন

সড়কপথ ও রেলপথ দুভাবেই যাওয়া যায়
রেলপথে হাওড়া স্টেশন থেকে মেমারি বা পাণ্ডুয়া লোকাল ধরে আসুন খন্নান স্টেশন। সেখান থেকে রিকশা, অটো, টোটোতে রাজবাড়ি। সময় লাগবে মিনিট দশেক।

সড়কপথে কলকাতা থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দক্ষিণেশ্বর অথবা হাওড়া দিয়ে সড়ক পথে আসা যায়।

থাকা ও খাওয়া

ঘর বুক না করলে রাজবাড়িতে ঢোকা যায় না। ঘর বুক করে আসাই ভালো। কারণ সবসময় ঘর পাওয়া যায় না।বেশিরভাগ ঘরে দু’জন করে থাকার ব্যবস্থা। কিছু ঘরে তিনজন ও ছ’জন থাকার ব্যাবস্থা আছে। ঘরভাড়া ১৭০০ -৪০০০ পর্যন্ত।
খাওয়া মিল সিস্টেম. ভেজ-ননভেজ সবরকমই পাওয়া যায়। খাবারের মান খুব ভালো।একবেলা খাওয়া খরচ মাথাপিছু ১৮০-২৫০।

ঘর বুকিং ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য ফোন করুন 91 96744 30332, 9830142389
লগইন করতে পারেন

http://www.itachunarajbari.com

Wednesday 4 May 2016

গরমে রিফ্রেশিং ফ্রুট সাংরিয়া


কথায় আছে প্যাহেলে দর্শনধারী, পিছে গুণবিচারী...
সাংরিয়া রূপ-গুণ দুই-এর অধিকারী
ভাবছেন এটা আবার কী জিনিস?

সাংরিয়া হল একটি পানীয় অ্যালকোহলিক, নন অ্যালকোহলিক দুই হয় যাতে চুমুক দিলেই চমকমূলত তরতাজা মরশুমি ফল দিয়ে বানানো হয় এই পানীয়

তাহলেজেনে ও শিখে নিন গরমে তরতাজা থাকার আর এক RECIPE
এর জন্য লাগবে: পাতিলেবু, পুদিনা পাতা, আপেল, বেদানা, মুসাম্বি লেবু, আনারসের রস,আম, সোডা, বরফ কুঁচি

কী ভাবে করবেন: পাতিলেবু গোল করে স্লাইস করে নিন সমস্ত রকমের ফল পাতলা স্লাইস করে কাটুনতাতে পাতিলেবুর রস ও চিনির রস দিয়ে, পুদিনা পাতা ভালো করে মিশিয়ে ফ্রিজে ঘণ্টা দুয়েক রেখে দিনএবার যে ফল ইচ্ছা সেই ফলের রস করুন বিভিন্ন ফল যেমন আঙুর, বেদানা, আনারস, আম সব ফলের রস করে মিশিয়ে নিতে পারেন শুধু আমের জুস বা কমলালেবুর জুস দিতে পারেন
একটি স্বচ্ছ্ব কাচের পাত্রে বরফ কুঁচি দিয়ে তাতে ফ্রিজে রাখা  লেবুর রস ও চিনির রসে ম্যারিনেড করা ফল দিন ফলের রস ও সোডা মিশিয়ে দিন ব্যাস তৈরি আপনার চিলড কালারফুল ফ্রুট সাংরিলা
যে সময় যে ফল পাওয়া যায় তাই দিতে পারেন

আর অ্যালকোহলিক সাংরিলার জন্য ফলের রসের বদলে শুধু মিশিয়ে নিন মনমতো ওয়াইন


Thursday 28 April 2016

ম্যাজিক ! চলে যাবে সানট্যান

প্রচণ্ড গরমে চারদিক ঝলসে যাচ্ছে. তবে গরম বলে ঘরে বসে থাকলে তো চলে না। কাজের প্রয়োজনে অনেককেই রোজ বেরোতে হয়।কিন্তু সূর্যদেব যে ভাবে রেগেছেন, তাতে বেরোলেই জ্বলন্ত দৃষ্টি হানছেন।যার ফল সান ট্যান, ত্বকের অকাল বার্ধক্য, র‍্যাশ, শুষ্ক নির্জীব ত্বক, বলিরেখা। প্রখর দাবদাহ থেকে ত্বককে বাঁচাতে রইল কিছু কার্যকরী টিপস।

শসা, লেবুর প্যাক
শসা বেটে তার সঙ্গে পাতি লেবুর রস ও গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক বানান। শসা ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। আর পাতিলেবু হল ভিটামিন সিতে ভরপুর। এতে থাকে সাইট্রক অ্যাসিড। যা ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে খুব উপযোগী।ভিটামিন সি অ্যান্ট এজিং এজেন্টের কাজ করে।
রোদ থেকে এসে ভালভাবে মুখ পরিষ্কার করে প্যাকটি লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন. তারপর ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন. প্রতিদিন এই ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করলে, এই গরমেও আপনার ত্বক থাকবে সজীব।


পেঁপে-মধুর প্যাক

পাকা পেঁপে সান ট্যান তুলতে খুব উপযোগী। পেঁপেতে থাকা উত্সেচক শুধু ত্বকের কালো ভাব দূর করে তাই নয়, এতে থাকা ভিটামিন রং উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে তোলে। আর মধুর ব্যবহার দীর্ঘদিনের। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। ক্ষতিকর সূর্যরশ্মির প্রভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে অকাল বার্ধক্য, বলিরেখা পড়া আটকাতে পারে মধু।
পেঁপে পেস্ট করে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে পরিষ্কার মুখে মাখুন। ৩০ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে নিজেরাই দেখবেন ফ্রুট প্যাকের কামাল।

মসুরির ডাল ও টমেটো, অ্যালোভেরার প্যাক


দাগ, ছোপ তুলতে মুসুরির ডালের জুড়ি মেলা ভার। প্রচণ্ড পরিমাণে সান ট্যান হলে মুসুরির ডাল ব্যবহার করুন। এতে মেশান অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা ত্বকে র‍্যাশ, জ্বালা কমাতে সাহায্য করে। টমেটো ত্বকের জৌলুস ফিরিয়ে আনে।
মুসুরির ডাল আধঘণ্টা জলে ভিজিয়ে পেস্ট করে তাতে অ্যালোভেরা ও টমেটো পেস্ট মিশিয়ে নিন। মুখ পরিষ্কার করে মেখে নিন। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

কলা-দই প্যাক
বলিরেখা রুখতে কলার প্যাক খুব কার্যকরী। কলায় থাকা ভিটামিন ত্বককে উজ্জ্বল করে।কালো ছোপ দূর করে। কমলালেবুতে থাকে ভিটামিন সি। যা অ্যান্টি এজিং। দই প্রাকৃতিক ব্লিচের কাজ করে।
কলা চটকে তাতে দই ও কমলালেবুর রস মিশিয়ে প্যাক বানান। মুখ পরিষ্কার করে মেখে নিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন।

ওটমিল প্যাক
অ্যালার্জিক, র‍্যাশ-এ ভরা ত্বকে ওটমিল খুব উপকারী। ওটমিল দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। মুখ ভালভাবে ধুয়ে প্যাক লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।







Tuesday 26 April 2016

ভারতের মিনি গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখতে চলুন পান্নায়




আমেরিকার বিখ্যাত গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের কথা তো সকলেই জানেন কিন্তু জানেন কী ভারতেও এমন একটি রঙিন গিরিখাত আছে, যা বিখ্যাত গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের কথাই মনে করিয়ে দেয় গ্রানাইট, ব্যাসল্ট, কোয়ার্টজ, ডলওমাইট-এর সংমিশ্রণে এই ক্যানিয়ন  ভীষণ রঙিন ও অবর্ণনীয় সুন্দর

মধ্যপ্রদেশের ওয়ার্লড হেরিটেজ সাইট খাজুরাহো থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরেই গন্তব্যস্থলটি। কেন নদী থেকে সৃষ্ট রেনে নদীর গিরিখাত পান্না জাতীয় উদ্যানের মধ্যে দিয়ে জঙ্গুলে পথ পেরিয়ে সেখানে গেলে মুগ্ধ হতে বাধ্য হবেন পর্যটকরা জঙ্গুলে পথে অভ্যর্থনাকারী হিসেবে নীল গাই ও ময়ূরেরও দেখা মিলতে পারে। পান্না জাতীয় উদ্যানের উত্তরে কেন ও খুদার নদীর সংযোগস্থলে সৃষ্টি রেনে জলপ্রপাতের। এখানেই গড়ে উঠেছে কেন ঘরিয়াল স্যানচুয়ারি
রেনে নদীর নামকরণ রেনি বা বর্ষার মরশুম থেকে বর্ষায় এই জলপ্রপাতের প্রবল জলধারায় ভেসে যায় ৩০ ফুট গভীর গিরিখাতপাথরে ধাক্কা খেয়ে প্রবল শব্দ প্রতিধ্বনিত হয় জঙ্গল জুড়ে যৌবনবতী নদী ও জলপ্রপাতের বাষ্পীভূত জলকনায় সাদা হয়ে যায় চারপাশ।সেই রূপ দেখার মতো।
কিন্তু শীত ও গ্রীষ্মে এই নদী হয়ে যায় সরু ফিতে জলপ্রপাতও শুকিয়ে যায় আর তখনই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে লাল, ধূসর, কালো, হলদে রঙের মিশেলের এক অদ্ভূত সুন্দর গিরিখাত প্রকৃতির সে আর এক রূপ


পান্না জাতীয় উদ্যানের বনকর্মীরা জানালেন, লক্ষ লক্ষ বছর আগে এখানেই নাকি আগ্নেয়গিরি ছিল বহুদিন তা মৃত আগ্নেয়গিরির খোলা মুখে এখন নদীর জল জমে থাকে ভূগোলের ছাত্ররা এখানে সার্ভের কাজে আসেন

আসেন পর্যটকরাও কিন্তু খাজুরাহোর মন্দিরের কথা সকলে জানলেও, সেভাবে প্রচার নেই রেনে জলপ্রপাতেরসম্প্রতি বন দফতরও এই এলাকার পর্যটনের প্রসারে উদ্যোগী হয়েছে



কী ভাবে যাবেন
খাজুরাহো বিমানবন্দর থেকে রেনে জলপ্রপাতের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। ট্যাক্সি ভাড়া করে সেখানে যাওয়া যায়।
সাতনা রেলস্টশনে থেকে খাজুরাহোর দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। রেলপথে হাওড়া, দিল্লি, মুম্বই, ভূপাল সব জায়গা থেকেই সাতনা পৌঁছনো যায়। সেখান থেকে সড়কপথে খাজুরাহো।